
আমাদের দৈনন্দিন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় চিনি কোনো না কোনোভাবে থাকেই। কিন্তু এই চিনি যে আমাদের যেসব শারীরিক ও মানসিক ভাবে সমস্যা বা ক্ষতিকারক হয় তা অনেক সময় আমরা জানি না বা বুঝতে পারি না। চিনিও অ্যালকোহলের মতো আসক্তিকর। কারণ, চিনি সরাসরি আমাদের রক্তে মিশে যায় সেই সাথে অতি উচ্চ মাত্রার ফ্রুকটোজ তৈরি করে আমাদের নেশা সৃষ্টি করে। সম্প্রতি এমনই তথ্য একটি গবেষণায় উঠে এসেছে।
চিনির বিপরীত নাম “হোয়াইট পয়জন” বা সাদা বিষ! চিনি বা চিনিযুক্ত খাবার বেশি খেলে শারীরিক ভাবে খুব ক্লান্ত লাগে, চিন্তাশক্তি কমে আসতে শুরু করে, মাথা ঝিমঝিম করে এবং শরীরে চর্বি জমতে শুরু করে। আমরা অনেকেই মনে করি চা খেলে আমাদের ক্লান্তি কমে অথবা ঝিমঝিম ভাব চলে যায়। আসলে এটি একটি ভুল ধারণা। কিন্তু বাস্তবতা হলো চিনি দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত চা খেলে ক্লান্তি ভাব আরও বেশি আসে। এজন্য চা যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু মাত্র ১৪ দিন চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার না খেলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক ভাবে আশ্চর্যজনক একটা পরিবর্তন ঘটবে। নিদ্রাহীন রাত কাটানো কিংবা হজম না হওয়ার মতো সমস্যা দূর করতে সহায়ক হতে পারে শুধু মাত্র ১৪ দিন কষ্ট করে চিনিমুক্ত থাকতে পারলে।
চিনিমুক্ত থাকতে প্রথম তিন দিন সবচেয়ে কঠিন হবে। কারণ, সর্বপ্রথম আপনার শরীরকে চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার না খাওয়াতে অভ্যস্ত করাতে হবে। আমরা অনেকেই জানি কোনো প্রকার ‘নেশাদ্রব্য’ হঠাৎ করে বন্ধ করলে শরীরিক ও মানসিক ভাবে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। এ সময় ক্লান্তি অনুভূত, পেটব্যথা, মাথাব্যথা ইত্যাদি হতে পারে। এ সময় শরীরে চিনির যে ক্ষতিকর যেই গুলো উপাদান জমা ছিল, তা শরীর নিষ্কাশনের কাজ শুরু করবে, তবে শরীরের অন্য সব প্রক্রিয়া স্বাভাবিক নিয়মে চলতে থাকবে।
৪র্থ দিন থেকে আপনার মনোযোগ ও শক্তি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে। এ সময় আপনি মনোযোগ ও শারীরিক শক্তি ফিরে পেতে শুরু করবেন। এরপর সপ্তম দিনে আপনি নিজেকে আগের চেয়ে শক্তিশালী ভাবতে থাকবেন এবং আপনার মনোযোগ আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যাবে।
তারপর শরীর চিনিমুক্ত হওয়ার সাথে সাথে আপনার পাচনতন্ত্র আগের চেয়ে দারুণভাবে কাজ করতে শুরু করবে, আর এটা ৮ম দিন থেকেই শুরু হবে। এ সময় আপনার অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ভারসাম্য ধীরে ধীরে খুঁজে পেতে শুরু করবে এবং পেট কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব ও অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যাও কমতে শুরু করবে।
২য় সপ্তাহের পর থেকে আপনার ঘুম আগের চেয়ে ভালো হতে শুরু করবে। সেই সাথে আপনার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও অনেক কমতে শুরু করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে চিনি শরীরের ঘুমচক্রে বিঘ্ন ঘটায়, তাই চিনিমুক্ত হলে আপনার নিদ্রাহীনতা দূর হয়ে আগের চেয়ে ভালো ঘুম হবে। এ সময় আপনার ক্ষুধা কমে গেলে আগের মতো বারবার খেতে ইচ্ছা করবে না তাই আপনার ওজন আগের চেয়ে কমে যাবে।
১৪ দিনের সব ধরনের চিনিমুক্ত জীবন শুরু করতে পারলে আপনি দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ও মানসিক কিছু সুবিধাও পাবেন। যেমন স্ট্রোকের ঝুঁকি, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমবে এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও থাকবে স্থিতিশীল। শরীরে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে চোখের সমস্যা, কার্ডিওভাসকুলার সমস্যা, টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা, কিডনির সমস্যা থাকে। তাই এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে ১৪ দিন চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার না খেলে।
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে চিনি খাওয়া বাদ দেওয়ার ফলে, একজিমা ও ব্রণ কমতে শুরু করবে। সেই সাথে মেজাজ এবং স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটতে থাকবে। এ ছাড়াও আপনার বিষণ্নতা দূর হয়ে যাবে এবং কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়বে।
বিঃ দ্রঃ চিনির পরিবর্তে চাইলে মধু বা খেজুরের গুড় খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। শতভাগ খাটি নির্ভেজাল প্রাকৃতিক চাকের মধু এবং খেজুরের গুড় অর্ডার করতে পারবেন এই পেইজ থেকে থেকে। খুবই ভালো এবং বিশ্বত্ব প্রতিষ্ঠান। Six Season Mart