আপনারা তো পন্ডিত চাণক্য সম্পর্কে অবশ্যই জানেন। তাই আমার নতুন করে কিছু বলার অবশ্যই দরকার নেই। আর যদি আপনি পন্ডিত চাণক্য সম্পর্কে কিছু না জানেন তাহলে YouTube এ চার্জ করলে চাণক্য পন্ডিত সম্পর্কে অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন। আর এরই মধ্যে কোন দোষ যদি আপনার মধ্যে থাকে, তাহলে এই মুহূর্ত থেকে সেগুলো চেঞ্জ করার জন্য সতর্ক হয়ে যান। নাহলে ক্ষতিটা শুধু আপনারই হবে আর কারো নয়।
আর বেশি কথা না বাড়িয়ে আলোচনাটি শুরু করা যাক:
যে তিনটি দোষ থাকলে আপনার ভবিষ্যৎ খারাপ হতে চলেছে?
১। হেটার্স: মানুষের মধ্যে এই দোষ গুলোর মধ্যে সবার প্রথমেই আসে হেটার্স।
আপনি আপনার গ্রামের, শহরে, পাড়ায় স্কুল-কলেজে এমনকি অনলাইন ফ্লাটপর্ম গুলিতেও সব সময় এমন কিছু মানুষ দেখতেই থাকবেন যারা সব সময় হেড ছড়াতেই ব্যস্ত থাকে। যাদের নিজের ভালো হলো কিনা তাতে কিছু যায় আসে না কিন্তু অন্যে ভালোটা তারা সহ্য করতে পারে না। তারা মনে করে যে, অন্যের খারাপ করে নিজে ভালো থাকাটা Possible, but reality কিন্তু তার উল্টু। যে কারণেই তারা কখনো শান্তি পায় না। আর এ দোষের কারনে জীবনেও তাদের কোনো উন্নতি হয় না। আচার্জ চাণক্যের মতে যেসব ব্যক্তি সব সময় গৃনা করতে ব্যস্ত থাকে অন্যকে ক্রোধ দেখায় তারা কখনো শান্তি পায় না। বরং ধীরে ধীরে তাদের জীবন দুঃখের অন্ধকারে ডুবে যায়।
২। ভিতু:
সমাজে এমনও কিছু সংখ্যাক মানুষ থাকে যারা শান্ত স্বভাবের হয়। আর কোনো জামেলায়ও তারা জড়াতে ছায় না। আর এর প্রধান কারণ হল ভয় পায় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। আর এই ভয় তাদের কোনদিন সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয় না। আর এই সুযোগ বুঝেই কিছু মানুষ তাদের শান্তি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টাও করে। যেমন তাদের সাথে কোন অন্যায় হলে তারা পুলিশে কমপ্লেন করতে ভয় পায়। তারা বলেন দূর পুলিশে জানিয়ে এসব চক্করে জড়িয়ে কি লাভ? আবার এমনই কিছু মানুষ অন্যের সাথে অর্থের বিনিময়ে আপোষ করতেও পিছু পা হয়না। আর এভাবেই সমাজে ক্রাইম এবং Corruption circle বাড়তেই থাকে। কিন্তু আচার্জ চাণক্যের মতে ভয় মানুষের একটি মারাত্বক দোষ। যা আপনাকে কখন সঠিক পথে নিয়ে যাবে না। তাই প্রত্যেকটি মানুষেরই সাহসী হওয়া উচিত। ন্যায় এবং নিজের অধিকারের জন্য লড়াই করা প্রত্যেকটি জিবের কর্তব্য। আর যদি আপনার সেই ক্ষমতা নাও থাকে তাও অন্তত দেখানোর চেষ্টা করা উচিত, যে আপনি পাওয়ারফুল। কারণ শত্রু সামনে যদি আপনি নিজের হাতিয়ার পেলে দেন তাহলে তো যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই সব কিছু শেষ। ঠিক যেমন ভাবে বিষিন শাপুড় নিজেকে বিশাক্ত ভঙ্গি করে শত্রুকে সরিয়ে দেয়।
৩। গিরগিটি:
কিছু মানুষের এমন স্বভাব থাকে যারা সুযোগ বুঝেই বদলে যায়। অর্থাৎ যাকে পাতি বাংলা ভাষায় বলে গিরগিটির মতো রং বদলানো। যারা আজকে তো নিজের কাজ হাসিল করার জন্য আপনাকে ভীষণ মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে মন গলাবে। কিন্তু নিজের পায়দা শেষ হলেই বা আপনার খারাপ সময় তাকে আপনি আর খোজেও পাবেন না। আর যদি আপনার মধ্যে এই দোষটি থাকে তাহলে আপনার নিজেই নিজেকে বদলাতে হবে। কারণ এখানে অন্য কেউ চাইলেও আপনার কোনো হেল্প করতে পারবেন। যতক্ষন না আপনি নিজর ভূল গুলো নিজেই বদলাতে চাইছেন। আর চাণক্য পন্ডিতও এই কারনেই বলেছেন উদিত সূর্য আর অস্থ যাওয়া সূর্যের রং যেমন একই রকম থাকে। তেমনী রং বদলানো ব্যক্তিরাও ভালো এবং খারাপ সময়ও একই রকম থাকে। অর্থাৎ তারা সময়ের সাথে নিজেদের রং বদলে ফেলেন। এবং মানুষের মধ্যে থাকা এই তিনটি দোষ এছাড়াও তিনি আরও এমন কিছু কথা বলেছেন যেগুলো এই দোষের থেকে বাইরে বেরিয়ে আপনাদের জীবনে উন্নতির দিকে অগ্রসর করবেন। যেমন অর্থাৎ সঞ্চয়ের জন্য অনেকেই ভাবে বিদেশে যাবেন। কাটি কাটি টাকা রোজগার করবেন কিন্তু চাণক্য পণ্ডিত বলেন যে আপনি যে দেশটিতে যাচ্ছেন সেটি অর্থ উপার্জনের জন্য শ্রেষ্ঠ কিনা তা আগে থেকেই জেনে নেওয়া উচিত। তা না হলে সেই দেশে গিয়ে আপনাকে কোন কষ্ট ভোগ করতে হতে পারে। তার মতে বিয়ের আগেই পত্নি কেমন হবে তার বিচার করে বিয়ে করুন। যাতে ভবিষ্যৎ জীবন আপনার জন্য সুখের হতে পারে।
চাণক্য পণ্ডিত বলেন যে শিষ্যের পড়াশোনায় মন নেই তাকে পড়িয়ে আপনি কোনদিন একজন ভালো শিক্ষক হতে পারবেন না। তাই সে রকম ছাত্রকে না পড়ানোই ভাল। তিনি বলেছেন দান করুন, অন্যকে সম্মান করুন, সবসময় সত্য কথা বলুন, আর এসব যারা করে তাদের জীবনে কোনদিন কষ্ট আসে না। তার মতে কার্যসিদ্ধি হয়ে গেলে যদি দেখেন সেখানে কোনো বিপদের আশঙ্কা আছে তাহলে সেই স্থান তখনই ত্যাগ করুন। ত্যাগ করার গুণ প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যে থাকা উচিত।
কারণ ত্যাগ করাই মানবতাকে বজায় রাখে। তাই মহান ব্যক্তিদের মধ্যে ত্যাগ করার ক্ষমতা প্রবল। তারা ত্যাগ করতে জানে আর কখনোই কোনো কিছুর উপরে তার লোভের বশবর্তী হয়ে পড়েনা। চাণক্য পণ্ডিত বলেন বিয়ের মধ্যে শত্রু এলেও তাকে সম্মান করুন। ঠিক যেমন গাছ তাকে ছেদন করতে আসা ব্যক্তিটিকেও ছায়া প্রদান করে।
তো বন্ধুরা আজকের আলোচনাটি এ পর্যন্ত, আলোচনাটি যদি আপনার লাইফে একটুও কাজের মনে হয়। তাহলে লাইক করুন এবং শেয়ার করুন আপনার বন্ধুদের সঙ্গে।
সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আপনার সময় অনেক অনেক ভালো কাটুক।